মাদকাসক্তদের চিকিৎসা একটি ধাপে ধাপে পরিচালিত জটিল প্রক্রিয়া, যা শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক পুনর্বাসনের উপর গুরুত্ব দেয়। নিচে এর মূল ধাপগুলো উল্লেখ করা হলো:
১. প্রাথমিক মূল্যায়ন (Assessment):
একজন চিকিৎসক বা মনোবিজ্ঞানী রোগীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা যাচাই করেন।
কোন ধরনের মাদক গ্রহণ করছে, কতদিন ধরে করছে, কোন শারীরিক বা মানসিক জটিলতা আছে কিনা তা নির্ধারণ করা হয়।
২. ডিটক্সিফিকেশন (Detoxification):
এটি মাদকের শারীরিক নির্ভরতা দূর করার প্রথম ধাপ।
এই সময় শরীর থেকে মাদকের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া হয়।
কিছুক্ষেত্রে ওষুধ প্রয়োগ করে উপসর্গ (withdrawal symptoms) নিয়ন্ত্রণ করা হয় (যেমন: মেথাডোন, বুপ্রেনোরফিন)।
৩. মানসিক চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং:
ব্যক্তিগত থেরাপি (CBT – Cognitive Behavioral Therapy), গ্রুপ থেরাপি, পরিবারভিত্তিক থেরাপি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
রোগীকে মাদক গ্রহণের কারণ বুঝতে সাহায্য করা হয় এবং বিকল্প মোকাবিলা কৌশল শেখানো হয়।
৪. ঔষধ নির্ভর চিকিৎসা:
নির্দিষ্ট মাদকের ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। যেমন:
হেরোইন বা আফিম জাতীয় আসক্তির ক্ষেত্রে: মেথাডোন বা বুপ্রেনোরফিন ব্যবহার করা হয়।
আলকোহল আসক্তির ক্ষেত্রে: ডিসালফিরাম, ন্যালট্রেক্সোন ব্যবহার করা হয়।
৫. পুনর্বাসন ও সামাজিক পুনর্মিলন:
রোগীকে সমাজে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নানা ধরনের কর্মশালা, দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ ও পেশাগত সহায়তা দেওয়া হয়।
পরিবারের সহযোগিতা ও সামাজিক সমর্থন খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৬. অনুসরণ ও রিল্যাপ্স প্রতিরোধ:
নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফলোআপ করা হয় যাতে রোগী আবার মাদকের দিকে না ফিরে যায়।
সাপোর্ট গ্রুপ (যেমন: Narcotics Anonymous) এ যুক্ত থাকা রোগীর জন্য উপকারী হতে পারে।